আজকে আমরা আলাপ করবো ফেইসবুক আইডির নিরাপত্তা নিয়ে।
নিচে দেখা যাক এর প্রতিরোধের কিছু উপায়, যা অবলম্বন করলে হয়তো আপনি ক্ষতি থেকে আপনার আইডি রক্ষা করতে পারবেননা, কিন্তু অনেকটা সুবিধাজনক পর্যায়ে রাখতে পারবেন।
১. হুমকি ধামকি চলবেনাঃ কাউকে ভুলেও, মজা করেও ফেইসবুকে থ্রেট দেওয়া যাবে না। আবার গালিগালাজ করা থেকে ও বিরত থাকতে হবে। নাহলে কেউ যদি রিপোর্ট করে আইডির আশা ছেড়ে দিতে হবে।
২. শক্তিশালী পাশওয়ার্ড প্রয়োগঃ কোন আইডির সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে মিশ্র ধরনের পাশওয়ার্ড এর দিকে নজর দিতে হবে। মানুষ সবসময় যে কমন ভুলটা করে তা হল নিজের ডিটেলস দিয়ে পাশওয়ার্ড দেয়, কিন্তু তা মোটেও নিরাপদ না। যেমনঃ নিজের নাম, পরিবারের কারো নাম, জন্ম তারিখ কিংবা মোবাইল নাম্বার এ ধরনের তথ্যাদি। মনে রাখবেন পাশওয়ার্ড দিতে গেলে বড় হাতের এবং ছোট হাতের অক্ষর যেকোন অংক (যেমনঃ GoodBoy420), স্পেস ইত্যাদি ব্যবহার করবেন। আর স্পেশাল চিহ্ন ও রাখতে পারেন। যথাঃ *, %, # (যেমনঃ GoodBoy#420) ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। পাসওয়ার্ডের মোট অক্ষর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কমপক্ষে ৬ সংখ্যার পাশ দিতে হলেও চেষ্টা করুন যাতে মিনিমাম ১০-১৫ অংক বিশিষ্ট হয়। আর পাসওয়ার্ডকে যাতে ভুলে না যান সেজন্য অন্য কোথাও সংরক্ষন করুন।
৩. নিয়মিতভাবে পাশওয়ার্ড পরিবর্তনঃ নিয়মিত ভাবে নতুন পাসওয়ার্ড দিন, দেখবেন তাতে পাশ ফাস হলেও ভয়ের কিছু থাকবেনা। আর পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে Forgot Password নামক অপশনটিতো অপেক্ষা করছেই আপনাকে হারানো পাশ ফিরে পেতে।
৪. ব্যাক্তিগত তথ্য সম্বন্দে সাবধানতাঃ প্রোফাইলে এমন কোন তথ্য দিবেন না যাতে দুষ্টচক্র এর হাতে আপনার তথ্য পাচার হয়ে যায়, আর সেই তথ্য থেকেই আপনার পাশওয়ার্ড ব্রেক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে নিরাপদ হল সেইসব তথ্য কাউকে না দেওয়া। এবেপারটা ব্যবহার করে আমি নিজে ৬ টা আইডি চেষ্টা করে ১০০% সফল হয়েছি। সো ডন্ট ডু দ্যাট, অবশ্য আমি তাদের দূর্বলতা চেক করার উদ্দেশ্যেই সেটা করেছি।
৫. অপরিচিত/ফেক একাউন্টকে বন্ধু বানাবেন নাঃ একটা অপরিচিত ব্যাক্তিকে কখনোই রিকোয়েষ্ট বা এক্সেপ্ট করা উচিত নয়, কারন এটা আপনার জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাড়াতে পারে। তাই ছবিহীন প্রোফাইল বা প্রয়োজনীয় ইনফো ছাড়া কাউকে এড করা কোন ভাবেই উচিত নয়।
৬. লিঙ্ক ক্লিকে সতর্কতাঃ ধরুন আপনাকে কেউ একজন একটা লিঙ্ক দিল, কিন্তু আপনাকে সেই লিঙ্কে ক্লিক করার আগে বেশ কয়েকবার চিন্তা করা উচিত। যেমন এমন হল এটা পিশিং লিঙ্ক, বা কুকি ষ্টিলিং স্ক্রিপ্ট বা বিপদ জনক কিছু, যা আপনার যেকোন প্রাইভেসি ভাংতে পারে।
৭. ইমেইল সূরক্ষা ও এর সতর্ক ব্যবহারঃ ইদানিং সবচেয়ে বেশি হ্যাক হয় ইমেইল এর মাধ্যমে, তাই ইমেইল এড্রেসের কোন লিঙ্কে যদি ব্যাক্তিগত তথ্য চায়, তাহলে ভুলেও সেই খানে কিছু দিবেননা, আর ফেইসবুকের হ্যাক কিন্তু ইমেইল দিয়েই করা যায়, তাই আপনার ইমেইল এড্রেসের পাশওয়ার্ডও অনেক ষ্ট্রং করবেন, নাহলেতো বুঝতেই পারছেন। আর সবসময় খেয়াল রাখবেন www.facebook.com এর লিঙ্ক ছাড়া আর বাকি সব লিঙ্ক ফেইক যেমন www.faceboook.com। কি দেখতে একই মনে হচ্ছে তাইনা, কিন্তু বিপদ এখানেই কাজেই কখনো এই ধরনের মেইলে ক্লিক করবেন না। কারন এগুলো ফিশিং সাইট, যা ফেইক অর্থাৎ ভুয়া। এই কয়েকটা পয়েন্ট কাজে লাগিয়ে আশাকরি আপনি বেশ শক্ত একটা অবস্থানে যেতে পারবেন, আপনার আইডিকে ৬০% সেফার বলতে পারবেন !
হ্যাকিংয়ের কবলে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন?
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ট্রাস্টওয়েভ অনলাইনে নিরাপদ থাকার পাঁচটি উপায় মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে টেলিগ্রাফ অনলাইন এ পরামর্শগুলো তুলে এনেছে। সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখুন হালনাগাদ সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। যখনই কোনো সফটওয়্যারের আপডেট বা হালনাগাদ উন্মুক্ত করা হবে তা ইনস্টল করে নিন। এতে নানা ধরনের পরিচিত ম্যালওয়্যার থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। ভাইরাসযুক্ত ওয়েবসাইট ও অযাচিত মেইল এড়িয়ে যান শুধু ভাইরাসপূর্ণ ওয়েবসাইটে যাওয়া বাদ দিলেই হবে না এর সঙ্গে প্রতারণাপূর্ণ মেইলের লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেসব মেইলে লোভনীয় অফার বা নানা প্রলোভন দেখানো হয়, সেই সব অযাচিত মেইল পড়াও বাদ দিতে হবে। যদি ব্যাংকের নামে কোনো মেইলও হয়, তবে মেইলের লিংকে ক্লিক না করে ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বা ওই লিংকটি ব্রাউজারে পেস্ট করে পরীক্ষা করে দেখতে হব প্রাইভেসি সেটিংস ব্যবহার করুন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে আপনার যে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার প্রাইভেসি সেটিংস ভালো করে খেয়াল করুন। আপনার বিশ্বস্ত গ্রুপের বাইরে কারও কাছে তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। আগের বিভিন্ন সবার জন্য উন্মুক্ত করা পোস্টগুলোতে নজর দিন। প্রাইভেসি সেটিংস ঠিকঠাক থাকলে কারও প্রোফাইল লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো সাইবার দুর্বৃত্তদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আপনি যা পোস্ট করেন তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিলে সারা দুনিয়া দেখ তাই গুরুত্বপূর্ণ কিছু পোস্ট করার আগে প্রাইভেসির বিষয়টি নিয়ে ভালো করে ভা পাসওয়ার্ডের বাইরেও ভাবুন এখন আর শুধু পাসওয়ার্ড দিয়ে নিজেকে নিরাপদ ভাবা ঠিক হবে না। প্রায় সময়ই পাসওয়ার্ড হ্যাক হতে দেখা যাচ্ছে। টু-স্টেপ অথেনটিকেশন বা দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবহার করুন। এখন অনেক ওয়েবসাইট বা সার্ভিস দুই স্তরের নিরাপত্তা দিচ্ছে। দুই স্তরের এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহারকারীকে তাঁর অ্যাকাউন্টে নিয়মিত পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পাশাপাশি লগ ইন করার সময় স্মার্টফোন ও ট্যাবে আরও একটি কোড ব্যবহার করতে হয়। এতে অতিরিক্ত একটি স্তরের নিরাপত্তা পাওয়া যায়। তাই যতক্ষণ হাতে মোবাইল থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত আর কেউ অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারছে ন বিষয়টি নিশ্চিত হয়। অ্যাপল, গুগল, ফেসবুক, ড্রপবক্সের মতো অনেক সার্ভিসের ক্ষেত্রে দুই স্তরের এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া রয়েছে। নতুন কোনো যন্ত্রে যখনই লগ ইন করতে যাবেন, তখন পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর একটি গোপন কোড চাওয়া হবে। এটি কেবল আপনার ফোনে ততক্ষণাৎ পাবেন। যদি হ্যাকার আপনার পাসওয়ার্ড জানে, তবে আপনার মোবাইলে আসা কোড না জানা পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারবে না। ই-মেইলের নিরাপত্তা সেটিংস উন্নত করুন আপনি যাঁদের কাছ থেকে মেইল পান, তাঁদের মেইলের পাঠানো ছবি কি স্বয়ংক্রিয় ডাউনলোড হয়ে যায়? ওয়েব কিংবা ই-মেইল থেকে যদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওসহ অন্যান্য উপকরণ ডাউনলোড হতে থাকে তা বন্ধ করে দিন। কিছু ই-মেইল ক্লায়েন্ট বাইডিফল্ট এ সুবিধা রাখে আবার কিছু ক্লায়েন্ট রাখে না। তাই মেইল ক্লায়েন্টের সব মেইল পরীক্ষা করে দেখা ভালো।